যে ২২টি বিষয় সকল বিএনপি কর্মীর জানা থাকা প্রয়োজন—বললেন তারেক রহমান।​

৫ই নভেম্বর ২০১৪

(১) স্বাধীনতার প্রথম দলিল প্রণয়নকারী আত্মনির্ভরশীল মুক্তিযুদ্ধের নায়ক বিপ্লবী সিরাজ সিকদারকে আটকাবস্থায় তৎকালীন আওয়ামী সরকার রক্ষী বাহিনী দিয়ে হত্যা করে। এটি ছিল প্রথম হাই প্রোফাইল ক্রসফায়ার। 
(২) শেখ মুজিবকে হত্যার পর বাকশাল নেতা মোশতাক রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেন। গঠন করেন মন্ত্রীসভা। শেখ মুজিবের মন্ত্রীসভার প্রায় সকলেই মোশতাকের মন্ত্রীসভার সভায় শপথ নেন। 
(৩) মোশতাক সারাদেশে সামরিক আইন জারি করেন। ঐ সময় সেনাপ্রধান ছিলেন শফিউল্লাহ।। শহীদ জিয়া সেই সময় ছিলেন সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ। 
(৪)শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডের পরে মোশতাকের মন্ত্রী সভার শপথ অনুষ্ঠানে যাননি জিয়াউর রহমান। বিজয়ীর বেশে গিয়েছিল তাহের-ইনু বাহিনী এবং তৎকালীন মুজিব বিরোধী নেতারা। 
(৫) শেখ মুজিব হত্যাকান্ডের পর আরো কমপক্ষে দশ দিন, অর্থাৎ ২৪শে আগস্ট পর্যন্ত জেনারেল শফিউল্লাহ ছিলেন সেনা প্রধান।। 
(৬) রাষ্ট্রদূত হিসাবে সরকারি চাকুরী কনফার্ম করার পর সেনাপ্রধানের পদ ছাড়েন শফিউল্লাহ। এরপর যথা নিয়মে ডেপুটি চীফ অব স্টাফ থেকে প্রমোশন পেয়ে ২৫শে আগস্ট সেনাপ্রধান হন জিয়াউর রহমান। 
(৭) সেনাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার পর রক্ষী বাহিনীর প্রভাবমুক্ত একটি শক্তিশালী পেশাদার ও সেনাবাহিনী গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন শহীদ জিয়া। 
(৮) জিয়াকে মেনে নিতে পারেননি ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ। তিনি ভেতরে ভেতরে জিয়াউর রহমানকে সরানোর চক্রান্ত শুরু করেন। 
(৯) চক্রান্তের অংশ হিসেবে খালেদ মোশাররফ— ১৯৭৫ সালের ২রা নভেম্বর সেনা প্রধান জিয়াউর রহমানকে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করেন।
(১০) ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মোশতাকের অনুমোদন নিয়ে মেজর জেনারেল হিসাবে নিজেই নিজের প্রমোশন নেন এবং এরপর প্রশাসন চলে খালেদ মোশারফের ইশারায়। 

(১১) ১৯৭৫ সালের ৫ই নভেম্বর রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন মোশতাক । তার আগে মোশতাক ও খালেদ  মোশাররফ বিচারপতি সায়েমকে রাষ্ট্রপতি   হিশাবে দায়িত্ব দেন ৬ই নভেম্বর। বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি।   শেখ মুজিব পাকিস্থানের পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে ফেরত আসেন ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারী। এর দুই দিন পর ১২ই জানুয়ারী সায়েমকে প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়।

(১২) ১৫ই অগাস্ট থেকে মোশতাক শফিউল্লাহর জারী করা সামরিক আইন বহাল থাকায় রাষ্ট্রপতি সায়েম একাধারে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। উল্লেখ্য,  ৭ই নভেম্বর সংগঠিত হয় সিপাহী-জনতার  ঐতিহাসিক বিপ্লব।  শহীদ জিয়া কে বের করে আনা হয় বন্দিদশা থেকে।

(১৩) ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর জেলের মধ্যে সংগঠিত হয় চার নেতা হত্যাকাণ্ড।  আবার ৬ই নভেম্বর পালটা ক্যু তে নিহত হন খালেদ মোশাররফ । ১৯৭৭ সালের ২০শে এপ্রিল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন বিচারপতি সায়েম।

(১৪) এই সময়কালে জিয়া ছিলেন সেনা প্রধান এবং উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক।

(১৫) ১৯৭৭ সালের ২০সে এপ্রিল প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করেন বিচারপতি সায়েম এবং উত্তরাধিকারী হিসাবে প্রধান সামরিক আইন প্রকাশকের দায়িত্ব নেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ।

(১৬) ১৯৭৮ সালের ৩রা জুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হবার গৌরব অর্জন করেন রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়া। এই নির্বাচনে মোট প্রাথী ছিলেন দশ জন।

(১৭) ১৯৭৯ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারী জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় । নির্বাচনে বি এন পি ২৬০ টি এবং আওমীলীগ ৩৯ টি আসন লাভ করে। নির্বাচনে মোট ২৯ টি দল অংশ নেয়।

(১৮)  ১৯৭৮ সালের মে মাসে শহীদ জিয়া ১৯ দফা কর্মসূচী ঘোষণা করেন।

(১৯)  এই কর্মসূচীর উপর জনগণের আস্থা আছে কিনা সেটি যাচাই এর জন্য ১৯৭৮ সালের ৩০শে  মে গনভোট অনুষ্ঠিত হয়।

(২০)  জিয়াউর রহমান সামরিক আইন জারি করেননি। ১৫ই অগাস্ট সামরিক আইন জারি করেন মোশতাক।  জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর বরং তিনি সামরিক আইন প্রত্যাখ্যান করেন।

(২১) জিয়াউর রহমান ইনডেমিনিটি  অধ্যাদেশ  চালু করেননি। ইনডেমিনিটি  অধ্যাদেশ  চালু করেছিল মোশতাক সরকার ১৯৭৫ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর।

(২২) জিয়াউর রহমান দালাল আইন বাতিল করেননি। ১৯৭৫ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর দালাল আইন বাতিল করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম,  যে কিনা বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিল শেখ মুজিব কর্তিক।

Close Menu